কোটা আন্দোলন কেন করতে হয়েছিল।
সরকারী চাকুরীর ক্ষেত্রে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় মাধ্যমে বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ সুবিধা দেয়ার নামই হলো কোটা। এটি প্রথম চালু হয় ১৯৭২ সালে। এরপর সংস্কার করা হয় ১৯৭৬ সালে। পরবর্তীতে ১৯৮৫ সালেও আবার এটিকে সংস্কার করা হয় । উপরোক্ত তিনটি সংস্কারেই মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য ৩০ % কোটা রাখা হয়।
১৯৯৭ সালের সংস্কারে - মুক্তিযোদ্ধা না পাওয়া গেলে তাদের সন্তানদের জন্য এটি বরাদ্দের সুপারিশ করা হয়।
২০০২ সালে মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তান পাওয়া না গেলে মেধার ভিত্তিতে এটি বণ্টনের সুপারিশ করা হয়। কিন্তু ২০০৮ সালে এসে এটি বাতিল করা হয়।বলা হয়ে থাকে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান না পাওয়া গেলে এটা খালি রাখা হবে।,সর্বশেষ ২০১২ সালের সংশোধনীতে বলা হয় এ ৩০% মুক্তিযোদ্ধাদের নাতি-নাতনীরা বরাদ্ধ পাবে, সে সাথে ক্ষুদ্র নি গোষ্ঠীর জন্য ১% কোটা বরাদ্ধ করে প্রজ্ঞাপন জারি হয় :-
১. মুক্তিযোদ্ধা/সন্তান /নাতি-নাতনী = ৩০%
২. মহিলা -১০%
৩.জেলা -১০%
৪. উপজাতি -৫%
৫. নি গোষ্টী -১ %
মোট -৫৬%
এটা নিয়ে বিভিন্ন মহলে আপত্তি উঠে। বিশেষ করে মেধার মূল্যায়ন না করে -৩০% মুক্তিযোদ্ধা নাত-নাতনিদের কোটাকে ১০% করার জন্য সবাই আপত্তি জানায়। কিন্তু সরকার তাদের সে আপত্তিকে অগ্রায্য করে নিজেদের সিদ্ধান্তে অনড় থাকেন। এ নিয়ে মেধাবী ছাত্রদের মাঝে অসন্তোশ ছড়িয়ে পড়ে এবং দিনে দিনে বেকার সংখ্যা বাড়তে থাকে।
২০১৮ সালে নুরুর নেতৃত্বে সারা দেশে কোটা সংস্কারের দাবীতে ছাত্ররা রাস্তায় নামে।তারা কিন্ত কোটা বাতিল চায়নি চেয়েছে সংস্কার । তাদের দাবী ছিল ৩০% মুক্তিযোদ্ধা কোটা সংস্কার করে ১০% করা হোক এবং জেলা কোটা উঠিয়ে দেয়া হোক। এ দাবী নিয়ে তারা রাস্তায় নামলে পুলিশ ও ছাত্রলীগ ব্যাপকভাবে কোটা আন্দোলন কারী দমন নিপীড়ন শুরু করে। দেশব্যাপী সেসব চিত্র এবং ভিডিও ছড়িয়ে পড়লে দেশ-বিদেশে সরকার ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়ে , শেখ হাসিনা সংসদের দাঁড়িয়ে কোটা প্রথা উঠিয়ে দেবার ঘোষণা দেন।
এটা নিয়ে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান সহ একাধিক সংগঠন আবার রাস্তায় নামেন এবং কোটা ব্যবস্থা পুনঃবহালের আবেদন জানান। এ মর্মে তারা হাইকোর্টে রিট করেন।
সে রিটের আবেদনের পেক্ষিতে এ বছরের জুন মাসে আপিল বিভাগ কোটা ব্যবস্থা পুনর্বহাল করেন এবং আগের প্রজ্ঞাপন বাতিল করেন।
এ নিয়ে ছাত্রদের মাঝে আবার ছড়িয়ে পড়ে অসন্তোষ।তৈরি হয় বৈষম্য-বিরোধী ছাত্র আন্দোলন পরিষদ। সরকার তাদের যৌক্তিক দাবীকে উপেক্ষা করে তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করে বক্তব্য দিতে শুরু করেন। এক পর্যায়ে দমন নিপীড়নের জন্য পুলিশ এবং ছাত্রদের উস্কানি দেন।বিশেষ করে জুলাই মাসে এসে ছাত্রলীগ এবং পুলিশ সহিংস হয়ে আন্দোলন কারীদের হত্যা নিপীড়ন শুরু করেন। আন্দোলন দমে যাবার পরিবর্তে সারা দেশের ছাত্র ছাত্রীরা ছাত্রলীগ এবং পুলিশের বিরুদ্ধে মাঠে নেমে আসেন। পুলিশকে সরাসরি আন্দোলন কারীদের গুলির নির্দেশ দেয় সরকার -
বাকীটা -শুধু ইতিহাস -----।
0 মন্তব্যসমূহ