তখন আমি #ইনকিলাবে রিপোর্টিং করি। ইউছুপ শরিফের একটি ম্যাগাজিনের স্পেশাল একটা নিউজ তৈরি করার জন্য #ইলিয়াস_কাঞ্চন ভাইয়ের সিডিউলড নিলাম । তখন কাঞ্চন ভাইয়ের হাতে প্রচুর ছবি । তার সময় পাওয়াই দুস্কর। আমাকে বাসার ঠিকানা দিয়ে বললেন ০৯টার মধ্যে পরের দিন সকালে তার মগবাজারের বাসায় উপস্থিত থাকতে।
আমি তখন মিরপুর একিট মেসে থাকি। বাসে ঝুলে ঝুলে এসে বাসা খুজে বের করতে ৯.৩০ বেজে যায়। যাইহোক বাসার ভেতরে ঢুকে দেখি #সোহানুর_রহমান_সোহান ভাই আমার আগ থেকেই ড্রইং রুমে বসা। তখনই সোহান ভাইয়ের সাথে আমার কথা এবং পরিচয়। কিছুক্ষনের মধ্যে কাঞ্চন ভাই রুম থেকে বের হলেন হাতে এক মগ কফি। আমাকে দেখেই বললেন কি সাংবাদিক সাহেব -আমারা টাইম ফেইল করলেই দোষ,আপনার জন্য আমরা বসে আছি এতক্ষন, এত দেরি করলে চলবে কেমনে? বললাম ভাই মিরপুর থেকে আসতে আসতে দেরি হয়ে গেছে।
সোহান ভাইকে দেখলাম তুমি তুমি করে বলে। তাকে উদ্দেশ্য করে বললেন -সোহান চলে আমরা বের হই।উনার সাথে এফডিসি বসে কথা বলবো। এরপর সে কফি খেতে খেতে কাঞ্চন ভাই আমি সোহান ভাই -চলে গেলাম এফডিসিতে। এর কয়েক বছর পর আমাদের সংগঠন #অঙ্গীকার_সামাজিক _সাংস্কৃতিক_সংঘ এর একটি নাট্যানুষ্ঠানে সাংবাদিক #জুটনের মাধ্যমে তাকে অতিথী হিসেবে আমন্ত্রন করি। অনুষ্ঠানের দিন একাধিকবার তার সাথে কথা হয়।
যাবার আগে আমাকে ডেকে নিয়ে বললেন ,আসিফ আমার তাড়া আছে যেতে হবে। পরে দেখা হবে তোমার সাথে। এরপর থেকে একাধিক বার একাধিক অনুষ্ঠানে তার সাথে দেখা হলে টুকটাক কথা হতো। একদিন মগবাজার মোড়ে দাঁড়িয়ে আছে আমি অফিসের গাড়ীতে মোড় অতিক্রম করতেই চোখে পড়লো । ড্রাইভারকে বললাম গাড়ী থামান। নেমে বললাম ভাই -গাড়ী না থাকলে আমার সাথে চলেন নামিয়ে দিয়ে আসি। হেসে বললেন -না ধন্যবাদ। আমার গাড়ী জ্যামে পড়ছে আসতেছে---
তাকে সব সময় দেখতাম খুব কম কথা বলতো। যা জিজ্ঞাসা করতাম তার বাইরে কথা তেমন বলতেন না। সালাম দিলে বলতো কি খবর আসিফ --জাস্ট এ পর্যন্তই। মগবাজারে উনার অফিসের উপরে এক সময় আমরা মহড়া করতাম। আমার সাথে একদিন দেখা । বললাম ভাই -আমিতো এ বিল্ডিং এ আমাদের গ্রুপের রিসার্সেল করি। শুনে খুশী হলেন।
কয়েকমাস আগ থেকে দেখলাম উনার ফেসবুকে আমি ডুকে গেছি। প্রতি শুক্রবারে এবং বিভিন্ন দিবসে আমাকে মেসেজ দিত। একদিন আমার সন্দেহো হলে জিজ্ঞাসা করি -এটা কি আসলেই সোহান ভাইর আইডি ? উনী জবাব দিলেন হ্যাঁ। এরপর একদিন বললাম ভাই আপনার সাথে দেখা করবো ফিল্মের একটা গল্প শুনাবো। উত্তরে বললেন সময় করে আস একদিন। কিন্তু উনী পরে দেখলাম ব্যস্ত হয়ে গেলেন তাই আর নক দেয়া হয়নি।
গতকাল শুনলাম উনার স্ত্রী মারা গেছে ঠিক একদিন পরে এভাবে তিনিও বিদায় নিবেন ভাবতেই অবাক লাগে। কি আর করা এসব সিদ্ধান্ত উপর থেকেই হয় কার কখন ডাক পড়ে কেউ জানেনা।
তার সম্পর্কে কার কি ধারনা জানিনা আমি দূর থেকে যতটুকু দেখেছি উনাকে ভদ্র কোমল, মিষ্টি ভাষী একজন মানুষ এবং খুব গুনী একজন নির্মাতা বলেই মনে হয়েছে। আমি তার বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করি।

0 মন্তব্যসমূহ