আমার প্রথম চাকুরী ছিল একটা বিদেশী কোম্পানীতে। অফিসে চা্ইনিজ বস ছিল দুজন আমরা বাঙ্গালী দুজন। তাদের একজন বাংলা জানতো এবং বলতে পারতো আরেকজন বাংলা ইংরেজি কিছু্ই জানতো না। উনী ছিলেন বড় বস। আমি ছিলাম কোম্পানীর ম্যানেজার।
একবার বড় বস আমাদের কাউকে কিছু না বলে ব্যাংক থেকে টাকা আনতে যায়। মহাখালী সিটিসেল বিল্ডিং এর বিপরীতে ছিল আমাদের অফিস। বস গাড়ী থেকে নেমে অফিসে ঢুকবে এ সময় হোন্ডা দিয়ে দুজন এসে অস্ত্রের মুখে টাকার ব্যাগ ছিনিয়ে নেয়। বস বিমর্ষ অবস্থায় অফিসে ডুকে আমাকে বলে-আলি বাবা মানি --গো---মানে ডাকাত সব টাকা নিয়ে গেছে। পিছন দিয়ে ড্রাইভার এসে বলে স্যার -এই এই ঘটনা। আমি ছোট বসকে উপর থেকে ডেকে আনি।
তাদের দুজনের আলাপন চলে কিছুক্ষন। আগা মাথাতো কিছু্ই বুঝতাম না। এরপর ছোট বস আমাকে বলে নজরুল তুমি থানায় ফোন করে ---।পুলিশকে আসতে বলে--আমারাতো মামলা করবে ---আমি তাদক্ষনাত গুলশান থানায় ফোন করি। আধা ঘন্টার মধ্যে পুলিশ আসে। প্রথমে আমার কাছ থেকে বিস্তারিত শুনে তারপর ছোট বসের কাছ থেকে জানতে চায়। তার বাংলা ক্লিয়ার ছিলনা সেটা আমি আবার তরজমা করে বুঝিয়ে দিই। কিছুক্ষন পর তারা আমাদের ড্রাইভারকে ডাকতে বলে। ড্রাইভারে বাড়ী ঘর কোথায় কি করে সব জেনে নেয়। ড্রাইভার বলে স্যার আমাকেতো বস আজ নেয়নি। উনী কোথায় গেছেন সেটাতো আর আমাকে বলে যায়নি।বস যখন গাড়ী থেকে নামে তখন আমার সামনেইতো ঘটনা ঘটে।
একটা সময় আমাদের দু বাঙ্গালীকে অফিস রুম থেকে বেরিয়ে যেতে বলে।তারা বসের কাছে জানতে চায় আমরা কেউ জানি কিনা তাহলে আমাদের থানায় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করবে। আমার ভেতরে তখন একটা ভয় ঢুকে যায় বস কি বলতে কি বলে আবার কাকে ফাসিয়ে দেয়। যদি বলে ঠিকাসে নিয়ে যাও তাহলে আর রক্ষা নেই।কিছুক্ষন পর আমাদের ভেতরে ডাকে। তখন দারোগা আমাকে বলে -আপনারা টাকা তুলতে গেলে আমাদের ফোন করবেন। আমরা ফোর্স পাঠিয়ে দিব আমাদের এক টাকাও দেয়া লাগবে না। তখন আমি বললাম -টাকা কখন তুলে এটাতো বসের ব্যাপার আমাদের কখনও জানায়না। যখন টাকার দরকার হয় চাইলে তারা টাকা দেয়।
যাইহোক সে ঘটনার পর থেকে আমার মাথায় একটা বিষয় কাজ করতে থাকে বেশি টাকা তুললে পুলিশের সাহায্য চাইলে পাওয়া যাবে। কাল দেখলাম পুলিশ স্বয়ং ব্যাংক থেকে টাকা ওয়ালাকে ধরে নিয়ে ২০ লাখ টাকা মিষ্টি খাওযার জন্য নিয়া নিসে। আহা দিন কত বদলাইছে। রক্ষক এখন ভক্ষকের ভুমিকায় অবর্তীন হইছে।

0 মন্তব্যসমূহ