নেপালের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি নাগরকোর্ট এলাকায় পাহাড়ের চুড়ায় এক নেপালির সাথে হাঁটতে ছিলাম। হটাত একটা দোকান দেখে তাকে বললাম তোমাদের এখানে কি চা পাওয়া যাবে ? সে বললো -হুম চা কপি যা খেতে চাও পাবে। বললাম চলো তোমাকে চা খাওয়াই।
আমাদের দেশের মত একটা টঙ্গ দোকানের বাইরে বসলাম দুজনে। দু কাপ চায়ের অর্ডার দিলাম। এরই ফাঁকে চোখ পড়লো দোকানে সামনে সারি সারি করে সাজানো প্রাণের পণ্যের দিকে । আমি তাকে বললাম তুমি কি জানো এ প্রাণ কোম্পানীর পণ্য গুলো কোথা থেকে আসে -সে বললো -জানি এগুলো তোমাদের বাংলাদেশের কোম্পানীর। তবে তৈরি আমাদের দেশেই হয়। কোম্পানী হয়তো তোমাদের দেশের। আমাদের দেশের বেশির ভাগ পন্যইতো ভারতের আমাদের আর আছে কটা। তোমাদের সরকার ইচ্ছা করলে আরো পণ্য এদেশে দিতে পারে কেন দেয়না। আমরাতো বাধ্য হয়েই ভারতের পণ্য কিনি।
এবার যখন ভারতে গেলাম -একটি শপিং মলে ডুকে জানতে চাইলাম -কোরিয়ান চুলের কলপ হাই স্পীড আছে কিনা। দোকানদার আমাকে বললো -দাদা আমাদের দেশে কি কোন পণ্যের অভাব আছে ? আমরা কেন বিদেশী পণ্য বিক্রি করবো ? পুরো ভারত জুড়ে খুঁজলেও আপনি বিদেশী কোন পণ্য পাবেন না।
আপনি কখনও ভারত গেলে কোন একটা ষ্টেশনারী বা কসমেটিক্স দোকানে ডুকে দেইখেন বিদেশী কোন পণ্য খুঁজে পান কিনা।বিপরীত দিক থেকে আমাদের দেশে এমন কোন দোকান খুঁজে পাবেন না যেখানে বিদেশী পণ্য নেই । যার অর্থ দাঁড়ায় আমরা শিল্প নির্ভর বাজার তৈরি না করে হয়ে গেছি রাজনীতি নির্ভর জাতি। এজন্য শিল্পপতি কিংবা চাকুরীজীবীদের দেখবেন -টাকা হলেই তারা শিল্প প্রতিষ্ঠান তৈরির চিন্তা বাদ দিয়ে -নমিনেশন কেনার চিন্তায় ব্যস্ত থাকে। কারণ এখানে বিনিয়োগ করলে আঙ্গুল ফুলে তালগাছ হওয়া যায় অতি সহজেই। আর নতুন জেনারেশান এর জোক অভিনয়ের দিকে।
আমরা দেশীয় পণ্য ব্যবহার না করে বিদেশী পণ্যতেই অভ্যস্ত হয়ে গেছি বেশি।অনেকে মনে করেন বিদেশী ব্রান্ড উইজ করে একটা প্রেস্টিজের ব্যাপার। আবার অনেক জিনিষ আছে যার বিকল্প আমাদের দেশে তৈরিও হয়নি। কারণ আমাদের মাথায় সৃজনশীল চিন্তা আসেনা -আসে রাজনৈতিক দল তৈরি করার চিন্তা।তাই আমাদের দেশের অলিতে গলিতে নেতা আর অভিনেতা বেশি।যোগ্যতা যাই থাকুক অভিনেতা হতে পারলে মানুষকে জ্ঞানও দেয়া যায়। যোগ্যতা যাই থাকুক অভিনেতা হতে পারলে মানুষকে জ্ঞানও দেয়া যায়।
0 মন্তব্যসমূহ