দেশের একজন এমপির গাড়ী বহরে হামলার অভিযোগে মামলা হয়েছিল ২০১৪ সালে। সে মামলার চার্জশিট দেবার আগেই-পুলিশ আসামী ধরতে গিয়ে একদিনেই এক থেকে তিন নাম্বার আসামীকে ক্রস ফায়ার দিয়ে দেয়।
পরবর্তীতে পৃথক পৃথক ভাবে আরো তিনজন অর্থাৎ ০৬ নাম্বার আসামী পর্যন্ত সবাইকে বিচার কিংবা চার্জশিট দেবার আগেই ক্রসফায়ার দিয়ে দেয়া হয়। কোন প্রতিবাদ হয়নি -কোন অভিযোগ হয়নি-উল্টো হয়তো যারা মেরেছে তাদের পুরস্কৃত করা হয়েছে এ দেশে।এভাবে নাম না জানা কত মামলায় কিংবা বিনা মামলায় কতজনকে ক্রস ফায়ার দেয়া হয়েছে এ দেশে তার হিসাব নেই।
অথচ দেখেন কক্সবাজারে একজন সেনা অফিসারকে ছুরি-ঘাত করে হত্যা করেছে ডাকাতদল। ঠিক তিন দিনের মধ্যে একে একে তাদের ০৬ জনকেই গ্রেফতার করেছে সেনাবাহিনী -এমনকি যে ছুরি-ঘাত করেছে তাকেও গ্রেফতার করা হয়েছে -কিন্তু কোন অস্ত্র-উদ্ধার অভিযানে বের হলোনা- তার সহযোগীরাও উতপেতে বসে থাকেনি এবার।
কারণ প্রাচীন কালে কাউকে ধরলেই আমরা দেখতাম তাকে নিয়ে অস্ত্র উদ্ধার অভিযানে যাওয়াটা ছিল বাধ্যতামূলক। এমনকি তারা সহযোগীদের তাকে ছিনিয়ে নেবার জন্য পাল্টা হামলা ছিল অপরিহার্য। কিন্ত এবার কি হলো ? গণেশ এত দ্রুত কেল পাল্টে গেল। এটা বোধকরি কেউ কামনা করেনি . কিন্তু কেন ?
কারণ -জবাবদিহিতা। কত মানুষকে ক্রস ফায়ারের নামে গত ১৫ বছরে হত্যা করেছে রেব পুলিশ ডিবি তার কি কোন হিসাব আছে ? তাদেরকে বিচারের সম্মুখীন হলে সবার কি ফাঁসি হত ?
তথ্য মতে ওসি প্রদীপ কুমারের হাতেই নিহত হয়েছে ১৬৪ জন। তিনিও একজন সেনা অফিসারকে মেরে ফেঁসে গেছেন। তাই তাকে বিচারের সম্মুখীন হতে হয়েছে। ভাগ্য খারাপ তার। সেনা অফিসার না হলে সেনাবাহিনীর কোন চাপ থাকতো না তিনিও আজ অবধি জাঁদরেল পুলিশ অফিসার হিসাবে মাথা উঁচু করেই থাকতেন। পেতেন পুলিশী পুরুষকারও। কিন্তু তার মত যে আরো শত শত ওসি DGFI অফিসার বিনা বিচারে মানুষ মেরেছে তাদেরও কি বিচরা হবে এ দেশে ? আছে কি কোন প্রমাণ তাদের বিচার করার মত ?
আমেরিকার অনেক খারাপ দিক আছে। তারা স্বার্থ ছাড়া কোন কাজ করেনা । কিন্তু তাদের কিছু ভালো দিকও আছে। তারা যদি বাংলাদেশ রেবের বিরুদ্ধ স্যাঙ্গশান না দিত তাহলে আজ অবধি ক্রস ফায়ার ট্র্যাডিশন বন্ধ হতনা।
আশার কথা এই যে আমরা এক অন্ধকার যুগ থেকে ক্রমশ: আলোর পথে ধাবিত হচ্ছি। বড় কিংবা ছোট সব অপরাধীকেই বিচারের মুখামুখি করি। দেশের বিচার করুক বিচার বিভাগ। বিনা বিচারে কোন নন জুডিশিয়াল কিলিং নয়।
0 মন্তব্যসমূহ