আয়নাঘর পর্ব-০৭
আয়না ঘর নিয়ে যতই ঘাটাঘাটি করছি ততই যেন রক্ত হিম শীতল হয়ে আসে। এক এক জনের অভিজ্ঞতা এক এক রকম। স্থান কাল পাত্র ভেদেও তুলে নেবার কারণও ভিন্ন। তবে একটা বিষয় ক্লিয়ার হয়েছি যে -
১.এটি নিয়ন্ত্রণ করতো #DGFI
২. প্রতিটি RaB কার্যালয়ের অধীনে থাকতো আয়নাঘর এবং টর্চার শেল।
৩.চোর ডাকাত ,খুন ,মারামারি,হামলা মামলা ভাংচুরের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকতো পুলিশ। এর বাইরের পৃথিবী নিয়ন্ত্রণ করতো #RAB and #DGFI
৪.#DGFI নিয়ন্ত্রিত হত সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে। পরিকল্পনা বা সিদ্ধান্ত দিতেন পলাতক মেজর জেনারেল #সাঈদ_তারেক।
৫.যাদেরকে ধরে নেয়া হতো তাদেরকে নির্দিষ্ট সময়ে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে যখন কোন তথ্য পেতনা তখন তাদের জঙ্গি বানিয়ে এরেস্ট দেখিয়ে তুলে দেয়া হতো ডিবির হাতে। ডিবির জিজ্ঞাসাবাদের পরে পাঠানো হতো কারাগারে
৬.যাদেরকে গুম বা তুলে নেয়া হতো তাদের ভাগ্য বরনে নির্ধারিত হতো-ক্রসফায়ার ,আয়নাঘরে নির্দিষ্ট মেয়াদে বন্দী ,টাকার বিনিময়ে ছেড়ে দেয়া এবং ডিবির হাতে তুলে দেয়া।
৭.পুলিশ বা ডিবি যাদের তুলে নিয়ে যেত তাদের কারোরেই DGFI এর হাতে তুলে দেয়া হতনা বরং নির্দিষ্ট সময়ের পর তারা চলে যেত হাজতে। এ ক্ষেত্রে ডিবি বা পুলিশ নিত আর্থিক সুবিধা যার কারণে ডিবির অধিকাংশ কর্মকর্তাদেরই আছে ঢাকায় একাধিক ফ্লাট এবং ব্যাংকে শত শত কোটি টাকা।
৮.একাধিক খুনের মামলার আসামীদের দেয়া হতো ক্রসফায়ার। ভিন্ন মতাদর্শী বা বিএনপি জামাত পন্থীদের ভাগ্যে জুটতো চরম নির্যাতন। যার কারণে আয়না ঘরে জাতীয় পার্টি .ন্যাপ , জাসদ ,ওয়াকার্শ পার্টি, সাম্যবাদী দল কিংবা কোন হিন্দুকে দেখা যায়নি।
সেনাবাহিনীর যেসব কর্মকর্তা এ নারকীয় পৈচাশিক নির্মম বর্বর টর্চার সেলের সাথে যুক্ত ছিলেন -তারা গোপনে প্রধানমন্ত্রীর অফিস থেকে নানান সুবিধা ভোগ করতেন। যার কারণে তাদের মধ্যে কোন অনুশোচনা ছিলনা বরং গর্বের সহিত তারা বলে বেড়াত কে কয়টা ক্রসফাযার দিসে।
প্রায় এক যুগেরও বেশি সময় ধরে চলতে থাকা গুম খুন এবং পরবর্তীতে আয়না-ঘরের তথ্য সাবেক সেনা কর্মকর্তাদের মুখে যখন প্রকাশ হতে থাকে। তখনই তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতেই ০৭ পুলিশ ও সেনাকর্মকর্তার বিরুদ্ধে প্রথম বারের মত সাঙ্গশান দেয় আমেরিকা।
এরা হলেন র্যাবের সাবেক মহাপরিচালক #বেনজির_আহমেদ, বর্তমান পুলিশ প্রধান #চৌধুরী_আবদুল্লাহ_আল-মামুন, অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন্স) #খান_মোহাম্মদ_আজাদ, সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন্স) #তোফায়েল_মোস্তাফা_সরোয়ার, সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন্স) মো. #জাহাঙ্গীর)আলম ও সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন্স) মো. #আনোয়ার_লতিফ_খান
এ নিষেধাজ্ঞা আরোপের পরই নড়ে চড়ে বসে হাসিনা প্রশাসন। কমে যায় ক্রস ফায়ার কিন্তু #আয়নাঘর থেকে যায় অন্তরালে।
(চলবে)
0 মন্তব্যসমূহ