স্বর্নাদাসের মৃত্যুকে ঘিরে দেশের বিশ্ব হিন্দু পরিষদ , হিন্দু বৌদ্ধ খৃষ্টান ঐক্য পরিষদ, বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশন , সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের কোন ভূমিকা চোখে পড়লো না । কোন প্রতিবাদ নেই -প্রেস ক্লাবে বিচারের দাবীতে কোন মানব বন্ধন নেই। কোন প্রেস কনফারেন্স নেই। কেননা স্বর্ণা দাস হিন্দু হলেও তার মৃত্যু ঘটেছে ভারতীয় সীমান্ত রক্ষীদের হাতে।তাই পাছে সম্পর্ক নষ্ট হয় -দাদারা অখুশি হয় এমন কোন কাজে তারা নেই। এজন্য তারা মুখে কুলুপ এঁটে আছে। অথচ প্রাচীন কালে আমরা দেখতাম -
হিন্দুদের অধিকার নিয়ে মানব বন্ধন প্রতিবাদ সভা, সংবাদ সম্মেলন, স্মারক লিপি ,ঘেরাও কর্মসূচী থেকে যা যা করার দরকার সবই হচ্ছে। কিন্তু এখন হচ্ছেনা কেন ?
কি ছিল স্বর্ণা দাসের অপরাধ। সে কি চোরাচালানী করতে গেছে -? নিষিদ্ধ পণ্য আনতে গেছে -নাকি অস্ত্র হাতে -ভারতীয়দের আক্রমণ করতে গেছে ? গুলি না করে তাকেতো গ্রেফতার করা যেত ? তার বিচার করা যেত। তাহলে কেন জীবন দিতে হলো তাকে ? কেন আপনারা নিশ্চুপ হয়ে আছেন ?
আরেকদল আছে যাদের প্রতিবাদের ভাষা হলো সরকারী ভাতার টাকা নিয়ে শহীদ মিনারে মোমবাতি প্রজ্বলন। তারাও এখন নীরব। তাদের ফান্ডের সংকট দেখা দিয়েছে মনে হয় -।তাছাড়া এ কাজের জন্য যে বাহবা পাবে সে সম্ভাবনাও নেই। তাই তারা এখন নায়ক নীরব।
একটা কথা আমাকে কেউ বুঝিয়ে বলেন-তো -কোন অন্যায়ের প্রতিবাদ জানাবো কিংবা সংহতি প্রকাশ করবো এটার সাথে মোমবাতি জ্বালানোর কি সম্পর্ক আছে ? হতে পারে এটা হিন্দু ভাইদের সংস্কৃতি । আমি এটা জানি যে -তারা আগুনকে সকল অকল্যাণ দূর করনের প্রতীক হিসাবে মনে করে। আমি তাদের সে সংস্কৃতিকে সম্মান করি। কিন্তু সেটা একটা সংগঠনের প্রতীক হয় কিভাবে ? তাহলে আপনি শিখা অনির্বাণ শিখা চিরন্তনের সামনে যান। সেখানেতো ২৪ ঘণ্টা এমনকি বছরের পর বছর ধরে অগ্নি শিখা জ্বালানো থাকে। শহিদ মিনারে আপনাকে মোমবাতি প্রজ্বলন করে প্রতিবাদ জানাতে হবে কেন ?
এখন আপনাদের কোন ভূমিকা দেখিনা কেন ? দাদাদের বিরুদ্ধে অবস্থান হয়ে যায় তাইতো ?
স্বর্নাদাস একেবারে গরীব ঘরের মেয়ে। অষ্টম শ্রেনীর ছাত্রী। বয়স ১৩। তারা ৫ ভাই বোন। অভাবের সংসারে তার এক ভাই কাজ করে ত্রিপুরায় অভিবাসী হিসাবে। ভাইয়ের কাছ থেকে টাকা আনার জন্য মায়ের সাথে ০১লা সেপ্টেম্বর রাতের অন্ধকারে তারা কুলাউড়া সীমান্ত দিয়ে মধ্যস্থতা কারীর মাধ্যমে সীমান্ত অতিক্রম করে। এসময় হটাত তারা বিএসএসএর নজরে পড়ে। বিএসএফকে দেখে তারা ফিরে আসার চেষ্টা করে। পিছন দিক থেকে গুলী করে -বিএসএসএফ। স্বর্নাদাস মাটিতে লুটিয়ে পড়ে-তার পিঠের গুলি ছেদ করে সামনে দিয়ে বের হয়ে যায়। স্বর্না একটা গর্তে পড়ে যায়। তার তাকে টেনে উঠানোর চেষ্টা করে। তখন স্বর্না বলে মা তুমি পালিয়ে যাও আমি আর বাঁচবো না -ওরা তোমাকেও গুলি করবে। এরপরও স্বর্নাদাসের মা তাকে নিয়ে বাংলাদেশে ফেরত আসার চেষ্টা করে। এক সময় দেখে স্বর্না মারা গেছে। এরপর সে লাস রেখে ফেরত আসে কারন তার কোমরেও গুলি লেগেছিল।
0 মন্তব্যসমূহ