আশুলিয়ায় পোড়া লাশ দাফনের পরে মা-বাবা জানতে পারে ছেলে বেঁচে আছে



জীবন কি ? জীবন হলো মৃত্যুর কাছ থেকে ধার নেয়া কিছুটা সময়।এমনটিই যেন ঘটেছে আশুলিয়ার মাদ্রাসা ছাত্র রিফাতের বেলায়।

০৫ই আগস্ট বিকালে আশুলিয়ার বাইপাইলে -বন্ধুদের সাথে আনন্দ মিছিল করতে বের হয়েছিল রিফাত। তারপর থেকে তাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না।কারণ এরই মাঝে ঘটে গেছে মর্মান্তিক সব ঘটনা। পুলিশের এলোপাথাড়ি গুলিতে সেদিন বাইপাইলে নিহত হয় ৩০ জনের মত সাধারণ মানুষ।কিন্তু এর মধ্যে রিফাত নেই।
পরেরদিন রিফাতের বাবা খবর পায় -আশুলিয়া থানার সামনে পুলিশ ভ্যানে কয়েকটি পুড়ে যাওয়া মৃত লাশ আছে। সেখানে গিয়ে রিফাত বাবা তার ছেলে ভেবে একজনের পোড়া লাশ নিয়ে আসে। হাত পা ছাড়া পুরো দেহ পুড়ে অঙ্গার হয়ে গেছে।চেনার উপায় নেই। তবুও ছেলের শেষ স্মৃতি হিসাবে বগুড়ায় নিয়ে লাস দাফন করে তার রাজ মিস্ত্রী বাবা লুতফর রহমান।
গ্রামের বাড়ীতে লাশ দাফন করে আসার কিছুদিন পর রিফাতের এক বন্ধু খবর পায় -সাভারের এনাম মেডিকেলে-আহত অবস্থায় পড়ে আছে রিফাত। তার মাথায় ভেতরে বুলেট বিদ্ধ হয়ে আছে। তাকে জরুরী অপারেশন করতে হবে তার বাঁচার আশা ক্ষীণ কিন্তু তার অভিভাবককে খুঁজছে হাসপাতালে কর্তৃপক্ষ। সে ছুটে যায় হাসপাতালে -চিহ্নিত করে রিফাতকে। ছুটে যায় তার মা বাবাও।
ডাক্তার জানায় তার মাথার ভেতরে গুলির বুলেট আটকে আছে। অপারেশন করলেও তার বাঁচার আশা ৫০/৫০। এদিকে রিফাতের মেমরি লস হয়ে যায় । সে কথা বলতে পারেনা কাউকে চিনতে পারেনা। মা বাবা ডাক দিলে ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে থাকে আর চোখের পানি ফেলে।
অসহায় রিফাতের বাবা লুতফর রহমান ছেলেকে নিয়ে ছুটে চলেন হাসপাতাল থেকে হাসপাতালে। একটা সময় কাকরাইলের ইসলামী সেন্ট্রাল হাসপাতালের এক ডাক্তার তার অপারেশন করেন। বর্তমানে রিফাত আশঙ্কা মুক্ত। তবে অতীতের কিছু মনে করতে পারছে না।
ডাক্তারের ভাষ্য মতে কিছুটা সুস্থ হলে তাকে আবারও অপারেশন করতে হবে -তাতে শর্ট টাইম মেমরি ফিরে পাবে। তবে হয়তো অতীতের দীর্ঘমেয়াদি কিছুই সে আর মনে করতে পারবেনা। এমনকি ফিরতে পারবে না স্বাভাবিক জীবনেও। এরজন্য দরকার তাকে বিদেশ নেয়া। কিন্ত অসহায় গরীব ফ্যামিলীর পক্ষে এত টাকা জোগান দেয়া সম্ভব নয়

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ