অনেকে বলে থাকেন -কোরান মানি কিন্তু হাদিস মানিনা। যারা এ কথা বলেন -তাদের যদি প্রশ্ন করি -দিনে রাতে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ এবং তার মধ্যে ১৭ ফরজ-এটা কোরানের -কোথায় বর্ণনা করা আছে দেখাতে পারবেন ?
নামাজের ভেতরে বাইরে (আরকান আহকাম ) ১৩ ফরজ কোরানের কোথায় লেখা আছে। রমজানের ৩০ রোজা এবং ৩০ নিয়ত কোথায় লেখা আছে ? হজ্বে তিন ফরজ ওমরায় দুই ফরজ। অযুতে -০৪ ফরজ ,গোসলে ০৩ ফরজ , তায়াম্মুমে ০৩ ফরজ কোরানের কোন আয়াতে কোন সুরায় -কত পারায় লেখা আছে দেখাতে পারবেন ?
বস্তুত এসব কিছু কোরানে নেই । এগুলো হাদিস দ্বারা প্রমাণিত বা প্রতিষ্ঠিত। এজন্য হাদিসকে অস্বীকার করার কোন উপায় নেই। আর যারা হাদিস মানেনা বলে প্রচার করছে -নিঃসন্দেহে তারা মুসলমান নয়।কারন নবীর হাদিসকে অস্বীকার করলে নবীকে অস্বীকার করা হয়।
প্রতিটি মুসলমানের জেনে রাখা দরকার যে ইসলামের মুল ভীত চারটি।
১.কোরান ( আল্লাহর বানী)
২.হাদিস (আল্লাহর বানী রাসুলের মাধ্যমে প্রচারিত)
৩.ইজমা (যেটা কোরান কিংবা হাদিসে নেই -সেটার ব্যাপারে সাহাবীদের ঐক্যমত্য।
৪.কেয়াস। (সমসাময়িক আলেমদের ব্যাখ্যা -যেমন নিত্য নতুন পশু পাখি মাছ খাওয়ার ব্যাপারে গবেষণা -ইলেকট্রনিক্স বস্তু ব্যবহারে ঐক্যমত্য ইত্যাদি)
এ গুলো কোন মুসলমানরেই অস্বীকার করার উপায় নেই।
এবার আসি মুল কথায় -হাদিস কাহাকে বলে এবং এটি আসলো কিভাবে ।
মূলত -নবী সঃ এর কথা কাজ এবং অনুমোদনকে হাদিস বলে। অর্থাৎ :-
১. নবী সঃ জীবদ্দশায় তিনি যা কিছু করতে বলেছেন এবং নিষেধ করেছেন
২. তিনি এমন কাজ করেছেন কিন্তু মুখে বলেননি সেটাও হাদিস।
৩. তার সামনে সাহাবীরা এমন কাজ করেছেন যেটা উনি নিষেধ করেননি -বা মৌন সম্মতি ছিল সেটাও হাদিস হিসাবে গন্য।
তবে হাদিস প্রচার কিংবা বর্ণনা নিয়ে একটা দ্বিধা বিভক্তি আছে। যেসব হাদিস একাধিক রাবি (বর্ণনাকারী) বর্ণনা করেছেন তাকে বলা হয় মশহুর।(সহিহ) আর যেসব হাদিস কম সংখ্যক রাবি বর্ণনা করেছেন -তাকে বলা হয় মাবরুর।(জয়িপ)
এসব বিবেচনায় প্রখ্যাত ০৬ জন ইমাম হাদিস সংকলন করেছেন। এ গুলেকে বলা হয় ছিয়া ছিত্তা বা ছয়টি হাদিস শাস্ত্র । অর্থাৎ রাসুলের পুরো জীবনীতে যত হাদিস আছে তা এই ছিয়া ছিত্তার বাইরে নেই। বর্ণনাকারীদের দিক থেকে বোখারী শরিফ সবচেয়ে খাটি এবং নির্ভুল হাদিস সংকলন করেছে- তাই সু্ন্নী মুসলমানরা বোখারীর সব হাদিসকেই সহীহ হিসাবে মান্য করেন । এ ছাড়া বাকি হাদিস গ্রন্থ গুলো হলো :-
১.বোখারি ২. মুসলিম ৩. তিরমিজি ৪.আবু দাউদ ৫.এবনে মাজা এবং ৬.নাসায়ী শরিফ।
আর এসব হাদিস নিয়ে যারা স্কলার লাভ করেন তাদের বলা হয় -মুহাদ্দিস। কোরান নিয়ে যারা পড়াশুনা করেন তারা -মুফাচ্ছির -ফেকাহ নিয়ে যারা গবেষনা করেন তাদের বলা হয় -মুফাক্ষের ।
0 মন্তব্যসমূহ