মধ্য প্রাচ্যে আমেরিকার ঘাটি সমূহ

 


মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন সামরিক বাহিনীর উল্লেখযোগ্য উপস্থিতি রয়েছে। বর্তমানে এসব ঘাঁটিতে সামরিক ও বেসামরিক নাগরিক মিলিয়ে প্রায় ৪০ হাজার মানুষ আছে। তাছাড়া রয়েছে বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা, যুদ্ধবিমান এবং যুদ্ধজাহাজ।


২০২৪  সালের জুলাই পর্যন্ত, যুক্তরাষ্ট্র তার সীমান্তের বাইরে অন্তত ১২৮টি সামরিক ঘাঁটি বজায় রেখেছে।
সাউথ কোরিয়ায় অবস্থিত ক্যাম্প হামফ্রিজ অঞ্চলভিত্তিক সবচেয়ে বড় মার্কিন বিদেশি ঘাঁটি।
২০০১ সাল থেকে, প্রায় ১.৯ থেকে ৩ মিলিয়ন মার্কিন সেনা আফগানিস্তান ও ইরাকে মোতায়েন হয়েছে, যাদের মধ্যে অর্ধেকের বেশি একাধিকবার মোতায়েন হয়েছিল।

বাহরাইন
এখানে রয়েছে মার্কিন নৌবাহিনীর পঞ্চম নৌবহরের সদর দপ্তর। এ বাহিনী উপসাগর, লোহিত সাগর, আরব সাগর ও ভারত মহাসাগরের একটি বড় অংশে দায়িত্ব পালন করে।

কাতার
দোহা শহরের বাইরে মরুভূমিতে অবস্থিত ২৪ হেক্টর আয়তনের আল-উদেইদ বিমানঘাঁটি যুক্তরাষ্ট্রের সেন্ট্রাল কমান্ড (সেন্টকম)-এর ফরওয়ার্ড হেডকোয়ার্টার। এটি মিশর থেকে কাজাখস্তান পর্যন্ত বিস্তৃত বিশাল এলাকার মার্কিন সামরিক তৎপরতা পরিচালনা করে। এটিই মধ্যপ্রাচ্যের সবচেয়ে বড় মার্কিন ঘাঁটি, যেখানে প্রায় ১০,০০০ সৈন্য অবস্থান করছে।

কুয়েত
এখানে রয়েছে বহু বিস্তৃত সামরিক স্থাপনা। এর মধ্যে রয়েছে:
ক্যাম্প আরিফজান: এটি ইউএস আর্মি সেন্ট্রাল-এর ফরওয়ার্ড হেডকোয়ার্টার।
আলি আল সালেম বিমানঘাঁটি: এটি ইরাক সীমান্ত থেকে প্রায় ৪০ কিমি দূরে অবস্থিত এবং একাকী, রুক্ষ পরিবেশের কারণে পরিচিত “দ্য রক” নামে।

সংযুক্ত আরব আমিরাত
আল ধাফরা বিমানঘাঁটি: আবুধাবির দক্ষিণে অবস্থিত এবং আমিরাতি বিমানবাহিনীর সঙ্গে যৌথভাবে ব্যবহৃত হয়। এটি দায়েশ বা আইএস বিরুদ্ধে অভিযানে এবং গোয়েন্দা নজরদারিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।
জাবেল আলি বন্দর (দুবাই): যদিও এটি আনুষ্ঠানিকভাবে সামরিক ঘাঁটি নয়, তবে এটি মার্কিন নৌবাহিনীর সবচেয়ে বড় নৌবন্দর যেখানে নিয়মিতভাবে বিমানবাহী রণতরীসহ অন্যান্য জাহাজ ভিড়ে।

ইরাক
আইন আল-আসাদ বিমানঘাঁটি: পশ্চিম আনবার প্রদেশে অবস্থিত। এটি ইরাকি নিরাপত্তা বাহিনীকে সহায়তা দেয় এবং ন্যাটো মিশনে অংশ নেয়। ২০২০ সালে ইরান এই ঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছিল কাসেম সোলাইমানিকে হত্যার প্রতিশোধ হিসেবে।

এরবিল বিমানঘাঁটি: ইরাকের কুর্দিস্তান অঞ্চলে অবস্থিত। এটি প্রশিক্ষণ, গোয়েন্দা আদান-প্রদান এবং সরবরাহ সমন্বয়ের মাধ্যমে মার্কিন ও জোট বাহিনীর অপারেশনকে সহায়তা করে।

সৌদি আরব
দেশটিতে ২০২৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রের সৈন্য সংখ্যা ছিল ২,৩২১। তারা সৌদি সরকারের সঙ্গে সমন্বয়ে বিমান ও ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা এবং সামরিক বিমান চালনার সহায়তা দেয়।
প্রিন্স সুলতান বিমানঘাঁটি: রিয়াদের দক্ষিণে প্রায় ৬০ কিমি দূরে অবস্থিত। এখানে প্যাট্রিয়ট মিসাইল ও থেড প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা মোতায়েন রয়েছে।

জর্ডান
মুওয়াফাক আল সালতি বিমানঘাঁটি: রাজধানী আম্মান থেকে ১০০ কিমি উত্তর-পূর্বে আজরাকে অবস্থিত। এটি মার্কিন ৩৩২তম এয়ার এক্সপেডিশনারি উইং-এর কেন্দ্র, যারা লেভান্ত অঞ্চলজুড়ে মিশনে নিয়োজিত।
✦ মধ্যপ্রাচ্যের মার্কিন সামরিক ঘাঁটির তালিকা
ঘাঁটির নাম অবস্থান দেশ
ইউএস নেভি ফিফথ ফ্লিট HQ         মানামা                             বাহরাইন
আল উদেইদ এয়ার বেস             দোহা শহরের বাইরে মরুভূমি     কাতার
ক্যাম্প আরিফজান                     কুয়েত সিটির কাছে                     কুয়েত
আলি আল সালেম এয়ার বেস ইরাক সীমান্তের প্রায় ৪০ কিমি দূরে    কুয়েত
ক্যাম্প বুহরিং                         ইরাক-কুয়েত সীমান্তের কাছে     কুয়েত
আল ধাফরা এয়ার বেস         আবুধাবির দক্ষিণে                     সংযুক্ত আরব আমিরাত
জেবেল আলি পোর্ট                 দুবাই                                             সংযুক্ত আরব আমিরাত
আইন আল আসাদ এয়ার বেস আনবার প্রদেশ, পশ্চিম ইরাক     ইরাক
এরবিল এয়ার বেস কুর্দিস্তান অঞ্চল,                                             উত্তর ইরাক ইরাক
প্রিন্স সুলতান এয়ার বেস রিয়াদ থেকে ৬০ কিমি দক্ষিণে             সৌদি আরব
মুওয়াফাক আল সালতি এয়ার বেস আজরাক, আম্মান থেকে ১০০ কিমি উত্তর-পূর্ব জর্ডান

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ