একটা রুমের ভেতর সর্বোচ্ছ ০৪টা খাট এবং পড়ার জন্য -ছোট ০৪টা টেবিল রাখা যায়। তবে তিনজন হলে ভালো হয়। কারণ রুমে ফ্যান মাত্র দুটো। সে জায়গায় ফ্লোরিং করে থাকতে হয়েছে ১৫/২০ জনকে।এ যেন মিনি আবুগিরী কারাগার।
এরমধ্যে নিজের জামা কাপড় ,বই ,আসবাবপত্র কিভাবে রাখে ?
এরপরে ঘুমাতে গেলে -নিঃশ্বাস ফেলতে গেলে রাতে বাথরুমে যেতে কিরকম অস্বস্তিকর পরিবেশে পড়তো হতো তা ভুক্তভোগী ছাড়া কারো পক্ষে অনুমান করা সম্ভব না।তারপরে খাবার যদি হয় লঙ্ঘর খানার মত তাহলেতো আর কথাই নেই।ঘটনার এখানেই শেষ নয়।
ভয়ানক পরিস্থিতি ছিল গন-রুম কিংবা গেস্ট-রুমে। সেখানে থাকতো হতো ৪০/৫০ জনকে এক রুমে। না থেকে উপায় নাই -বাইরে থাকতে গেলে অনেক টাকার দরকার। সে টাকা দেবার মত সামর্থ্য অনেক ফ্যামিলিরই নেই। তাই সর্বোচ্ছ ডিগ্রী লাভের আশায় এভাবে কষ্ট করে লেখাপড়া করতে হয়েছে-বছরের বছর ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ের হলের ছাত্রদের। কাল এমন একটি প্রতিবেদন দেখলাম নিউজ ২৪ চ্যানেলে।
বছরের পর বছর ধরে এ ধরনের সমস্যা নিয়ে ছাত্ররা অমানবিক পরিস্থিতির মাঝে অবস্থান করে গেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে কিন্তু রাজনৈতিক দলের নেতারা কিংবা ছাত্র সংসদ এসব সমস্যা সমাধানে কোন কার্যকর ভূমিকা রাখেনি। বরং এ সমস্যা জিইয়ে রেখে তারা ছাত্রদের মাঝে দলীয় প্রভাব বিস্তার করে চলতো -ছাত্রদের সাথে ব্যবহার করতো কেনা গোলামের মত।
যারা মিছিল মিটিং-এ অগ্রণী ভূমিকা পালন করতো তাদের দেয়া হতো একটু সুযোগ সুবিধা । কখনও খাট/চকি ওয়ালা রুমে কখনও গন রুম থেকে স্বস্তি-দায়ক রুমে। যেখানে ৩/৪ জন ফ্লোরিং করে থাকে। আর দলীয় কোন পদ পেলে দুজনের জন্য এক রুম।
গত ১৫ বছর ধরে বিভিন্ন ভাবে শোষিত হয়েছে ছাত্ররা, মনের ভেতর আগুন চাপা দিয়ে সহ্য করে গেছে কিন্তু প্রতিবাদ করার সাহস দেখায়নি। কারণ প্রতিবাদ করলেই নেমে আসতো নির্যাতন কিংবা হল থেকে বহিষ্কার। ফল হিসাবে জুন জুলাই এর আন্দোলনে তারা ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে স্বেচ্ছায় হয়ে নেমেছে রাস্তায়। করেছে সরকার পতন কিন্তু সাধারণ ছাত্রদের ভাগ্য পরিবর্তন হয়নি গত একবছরেও। এজন্য দরকার ছিল ছাত্র-সংসদ নির্বাচনের।
ছাত্রদল এসব সমস্যা সমাধানে কোন কার্যকরী ভূমিকা না রেখে সাধারণ ছাত্রদের মাঝে ছাত্রলীগের মত রাজাকার -দেশদ্রোহী-জামাতি তোকমা দিয়ে শিবিরকে কোন-ঠাসা করে -ছাত্র -ছাত্রীদের কাছে যেতে চেয়েছিল -কিন্ত ফলাফল হয়েছে উল্টো। অনেক ছাত্রের মনে সন্দেহের উদ্বেগ হয় যে ছাত্রলীগের মতই ছাত্রদলও ক্ষমতায় এলে আমাদের কল্যাণে কোন কাজ করবে না শুধু দলীয় কোন্দল আর প্রভাব বিস্তারের রাজনীতি করবে।
তাই তারা একবার শিবিরকে সুযোগ দিয়ে দেখতে চেয়েছে -তাদের ভাগ্যের পরিবর্তন কতটা ঘটে। কারণ গত একবছরে শিবির নানান কর্মকাণ্ড এবং ছাত্র-ছাত্রীদের কল্যাণে কাজ করে -ছাত্রদের কাছাকাছি চলে গেছে -যেটা ছাত্রদল করতে পারেনি। যার ফলাফল শিবিরের বিপুল ভোটে জয় এবং সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ড।এত হতবাগ বাম রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরাও।
0 মন্তব্যসমূহ