ট্রলার যখন গভীর সমুদ্রে যায় তখন তাদের ভরসা সমুদ্রের ঢেউ আর আকাশের মেঘ।নেটওয়ার্ক কাজ করেনা গভীর সমুদ্রে।

 



গভীর সমুদ্র থেকে যারা ইলিশ মাছ ধরে আনে -তাদের জীবন কতটা ঝুকিপুর্ণ তা শুনলে রীতিমত গা শিহরে উঠবে। কথা বলছিলাম যেসব ট্রলার ইলিশ মাছ ধরতে গভীর সমুদ্রে যায় তাদের সাথে। লোকেশান চর বয়রা রামগতি লক্ষীপুর। ঈদ উপলক্ষে এখানে দেখা মিললো প্রায় ২/৩ শত ট্রলারের। বঙ্গোপসাগরের সাথে মিশানো মেঘনা নদী। নদীর মোহনায় ছোট একটা ঘাট। নাম চর বয়রা।এটা রাতগতি মেইন শহর থেকে ০৫/০৬ কিলো পূর্বে। 

এখানকার সারি সারি ট্রলার দেখে চোখ জুড়িয়ে গেল। এরা এখানে গভীর সমুদ্র থেকে মাছ নিয়ে আসে। মহাজনকে মাছ বুঝিয়ে দিয়ে ফ্যামিলীর কাছে চলে যায়।ভাগ্য জুটে খাবারের মাছ। মাছের দাম বেশিতে এদের ভাগ্য ঘুরেনা।  মহাজনকে মাছ বুঝিয়ে দিয়ে আবার ২/৩ দিনের মধ্যে ট্রলারে তৈল ,খাবার, জ্বালানি সহ আনুসাঙ্গিক ভর্তি করে দুই থেকে ১৫ দিনের জন্য সমুদ্রে চলে যায়। 

কথা হচ্ছিল তাদের সাথে যখন সমুদ্রে ঝড় উঠে বা সংকেত দেয় তখন তারা কি করে ? জানা গেল দুই থেকে ০৫ কিলোমিটার পরে আর নেটওয়ার্কে কাজ করেনা। এরপর তাদের সঙ্গী হয় ভাগ্য কিংবা সমুদ্রের ঢেউ। যিনি জাহাজ চালান তিনি অনেক সময় সমুদ্রের ঢেউ দেখে আন্দাজ করেন ঝড়ের পূর্বাভাস আবার অনেক সময় আকাশের মেঘ দেখেই সেটা অনুমান করেন।সবচেয়ে বিপদজনক বিষয় হলো -গভীর সমুদ্র থেকে ফেরত আসতে অনেক সময় ০৩ থেকে ০৫ দিনও লেগে যায় তখন -ঝড়ের সাথে পাল্লা দিয়ে কেউ কেউ ফিরে আসে আবার কেউ কেউ হারিয়ে যায়।

এ হারিয়ে যাবার খাতায় বহু ফ্যামিলীর সদস্য আছে । আছে প্রতিটি গ্রামের একাধিক মানুষের নাম। কিন্তু কি করবে তারা ভাগ্যের কাছে অসহায়। এক একটি ট্রলারের দাম প্রায় কোটি টাকার উপরে। এসব ট্রলারের মালিক থাকে মহাজন। এ মহাজনের কাছে জিম্মী থাকে জেলেরা। অনেক সময় মহাজন বৃষ্টি বা ঝড়ের মধ্যেই ট্রলার চালাতে বাধ্য করে । কারণ মহাজনের ধাদন । মহাজনের ট্রলার,জাল ,১০/১৫ দিনের খাদ্য সামগ্রী এ সব কিছুর পরেও থাকে  দেনা কর্জ বা ধাদন।  যখন সমুদ্রে মাছের আকাল থাকে তখন মহাজন এদের সংসার চালায়। তাই এরা মহাজনের কথা শুনতে বাধ্য। 

তাই মহাজনকে খুশী করতে গিয়ে প্রতিবারই জেলেদের সলিল সমাধি ঘটে। এ গুলো অনেক সময় খবরে আসে অনেক সময় আসেনা। 

অসমাপ্ত

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ