সাধারণত মসজিদ বা ইমারত তৈরি করতে কংক্রিটের খুটির প্রয়োজন হয়। যার উপর ভিত্তি করে গড়ে উঠে দ্বিতীয় তৃতীয় কিংবা ৪র্থ তলা। কিন্তু এ মসজিদটির ডিজাইন এবং নির্মান শৈলি এমন ভাবে তৈরি করা হয়েছে যাতে খুটি এবং জানালার প্রয়োজন পড়েনী। অনেকটা প্রাচীন আমলের রাজা বাদশাদের ইমারতের মত।
বলছিলাম ইদানীং আলোচিত প্রাকৃতিক উপায়ে আলোক ও বাতাস সরবরাহের ব্যবস্থা সম্পন্ন মসজিদ- আস্সালাম এর কথা। এটির অবস্থান লক্ষীপুর জেলার রামগতি উপজেলার -আলেকজান্ডার থানার নিকটবর্তী শেখরটেক গ্রামে। বোধ করি আলেকজান্ডার উপকুলীয় শহর থেকে ২০ কিঃমিঃ দুরে। যে গ্রামটিকে এতদিন কেউ চিনতোনা জানতো না। এই বতসরেই এ মসজিদটিকে ঘিরেই এখন গ্রামটি বেশ আলোচিত। ইতোমধ্যে দর্শনার্থীদের ভিড়ে মসজিদের আশেপাশেও জমে উঠেছে দোকান এবং হকারদের আনাগোনা।প্রতিদিন গড়ে ২০০ থেকে ৩০০ লোক দুর দুরান্ত থেকে দেখতে আসে মসজিদটি।
জানা মতে এ গ্রামেরই সন্তান এ্যাডভোকেট দোলন। তিনি ঢাকা হাইকোর্টের উকিল। তারই উদ্যোগে দুবছর আগে গড়ে উঠেছে এ মসজিদটি। মসজিদের একপাশে পুকুর ও মাঠ। মাঠে দু দ্বারে হেফজখানা ও মহিলা মাদ্রাসা। এরই পাশে কাজ চলছে কলেজ এবং মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠার । এলাকাবাসী জানান এ মসজিদে ৫০০ থেকে ৭০০ জন মুসল্লী নামাজ পড়তে পারে। তৈরি করার পর থেকে ১৫/২০ জনের বেশি মুসল্লীকে জুমার সময়ও পাওয়া যেতনা। বিভিন্ন টিভি চ্যানেলে নিউজ যাবার পর দুর দুরান্ত থেকে লোক আসে। এখন প্রতি জুমাতে প্রায় চার পাঁচশো লোক হয়।
মসজিদের দু পাশের যে সাইড ওয়াল আছে সে গুলো এমন ভাবে তৈরি করা যে প্রত্যেকটি আলাদা আলাদা দেয়ালের মত এবং প্রতিটি দেয়ালের মাঝ খানে ফাঁক থাকায়।অনায়াসে বাতাস এবং আলো ভেতরে প্রবেশ করতে পারে। তবে যাতে বাইরের জীব জন্তু প্রবেশ না করতে পারে তার জন্য তারের নেটের ব্যবস্থা করা হয়েছে। কর্ণারের দেয়ালের ফাঁকে ব্যবহার করা হয়েছে স্বচ্ছ প্লাস্টিকের পাত। যাতে আলো ভেতরে প্রবেশ করতে পারে অনায়াসে। এছাড়া মসজিদের ভেতরে কৃত্রিম উপায়ে পানি সংরক্ষন করা হয়েছে । যাতে বাতাস প্রবাহের সাথে সাথে মুসল্লীদের গায়ে ঠান্ডা লাগে।
যদিও মসজিদে বিদুতের ব্যবস্থা আছে তবুও বিদুত চলে গেলে আলোক কিংবা গরমের প্রভাব পড়বেনা নামাজরত মুসল্লীদের গায়ে। এ ছাড়া রয়েছে ডিজিটাল মাইকিং ব্যবস্থা এবং মনিটর। যাতে ভেতরের অংশ থেকে ইমামের বানী বাইরের অংশের মুসল্লীরা দেখতে ও শুনতে পান। সবচেয়ে মজার ব্যাপার হলো শৈল্পিক কারুকাজের কারনে যেমন মসজিদে আলাদা কোন জানালা নেই তেমিন বড় ধরণের কেনা খুটিও নেই। বাহির থেকে দেখলে মনে হবে এটা কোন যাদুঘর বা বসতভিটা । তবে ভেতরে ঢুকলে দেখা যায় এর নান্দনিক সৌন্দর্য্য।
0 মন্তব্যসমূহ