ইয়েমেনের বাদশাহ আবরার -কাবা ঘরের মত করে একটি প্রতিকৃতি বা গির্জা তৈরি করলেন। ঘোষণা করলেন কেউ মক্কায় যাবেনা সবাই যেন হজ্জ করতে ইয়েমেনে আসে। এটা ছিল নবী সঃ জন্মের (৫৭০ খৃ:) বছরের ঘটনা কারো কারো মতে জন্মের আগের। বলা বাহুল্য তখনও মানুষ হজ্জ করতো। সেটা ইব্রাহীম আঃ এর দেখানো পদ্ধতিতে।
প্রচন্ড ক্ষমতার অধিকারী বাদশার কথায় রাজ দরবারের কিছু লোকজন ছাড়া কেউ কর্ণপাত করলো না। তদুপরি বনু কেনান গোত্রের কিছু লোকজন এসে তার সে কাবায় রাত্রে বেলায় মলত্যাগ করে যায়। সকালে এ খবর শুনে বাদশাহ খুব ক্ষিপ্ত হলেন। শপথ নিলেন কাবা ঘর নিশ্চিহ্ন করে ফেলবেন। সে হিসাবে বিশাল হস্তী-বাহিনী (৬০ হাজার) নিয়ে রওয়ান হলেন মক্কার উদ্দেশ্য। মক্কার কাছাকাছি এসে তারা মুজদালেফা ও মিনার মাঝামাঝি স্থান -ওয়াদিয়ে মুহাস্সারে অবস্থান নিলেন।
সে সময় কাবা ঘর কয়েকটি গোত্র মিলে দেখা শুনা করতো। আব্দুল মোতালব কাবার গেলাপ ধরে বললেন -হে কাবার মালিক আমার শক্তি নেই আবরার সাথে মোকাবিলা করার ,তোমার ঘর তুমিই রক্ষা করে। এ কথা বলে বাদশাহ আবরারের নিকট গেলেন একটি অভিযোগ নিয়ে -তার উট বহর আববারের বাহিনী দখল করে নিয়ে আসছে। শুনে বাদশাহ হাসলেন ,বললেন তুমি কাবার কেমন কাবার রক্ষনা বেক্ষন কারী -এত বড় বিশাল বাহিনী নিয়ে আসছি কাবাকে নিশ্চিহ্ন করে দেবার জন্য । যেখানে তুমি আমার কাছে করুণা ভিক্ষা চাইবে তা না করে করে উট ফেরত চাইছো ?
জবাবে মুত্তালিব বললেন -আমি উটের মালিক । এজন্য উট রক্ষার করতে আসছি। কাবার মালিক আমি নই -যিনি কাবার মালিক তিনি কাবাকে রক্ষা করবেন।
এ কথা বলে তিনি তার গ্রোত্রের মানুষদের নিয়ে পাহাড়ে উঠে গেলেন। তারা জানতো কাবা আল্লাহর ঘর এটা যে ধ্বংস করতে আসবে তার উপর আসমানি গজব অত্যাশন্ন।
বাদশাহ নির্দেশ দিলেন হাতি বহরকে সামনে এগিয়ে যাবার জন্য। কিন্তু মুজদা-লেফায় এসে হাতি আর সামনে আগায় না। সব হাতি পিছনে ফিরে যেতে লাগলো -এর পরের ঘটনা সবার জানা। চারিদিকে অন্ধকার হয়ে গেল। হাজারে হাজারে আবাবিল পাখি-দু পায়ে এবং মুখে -পাথর খণ্ড এনে আবরার বাহিনীর উপর নিক্ষেপ করতে লাগলো। প্রতিটি পাথর কনা তাদের কাছে আগুনের ঘোলার মত মনে হলো। সৈন্যরা ভয়ে এদিক সেদিক দৌড়াতে লাগলো কিন্তু কেহই নিস্তার পেলনা। এ দৃশ্য দেখে আবরার ইয়েমেনে দিকে রওয়ানা হলে পথেই সে মারা যায়। সে কথা মনে করিয়ে দিয়েই সুরা ফিল নাযিল হয়।
আপনি কি দেখেননি, আপনার পালনকর্তা হাতিওয়ালাদের সাথে কিরূপ ব্যবহার করেছেন? তিনি কি তাদের চক্রান্ত নস্যাৎ করে দেননি? তিনি তাদের উপর প্রেরণ করেছেন ঝাঁকে ঝাঁকে পাখি, যারা তাদের উপর পাথরের কাঁকর নিক্ষেপ করেছিল। অতঃপর তিনি তাদেরকে করে দেন ভক্ষিত তৃণসদৃশ।’ [সুরা ফিল]

0 মন্তব্যসমূহ