যে কারনে মানুষের টিভির প্রতি আগ্রহ কমে যাচ্ছে দিনে দিনে।

 



তখন আমাদের বাসায় টিভি ছিলনা। প্রতি সপ্তাহে ছায়া-ছন্দ মাসে একবার  বাংলা ছবি- টিভি সিরিজ হারকোলিক্স ,আজ রবিবার ,ইত্যাদি ,ম্যাকগাইবার দেখার ইচ্ছা থাকলেও কোন সাধ্য ছিলনা। বাবার ভয়ে। 

মনে পড়ে সেসব দিনের কথা -একবার -বাড়ীর পাশে মামাতো ভাইদের বাসায় ছবি দেখতে গিয়েছিলাম। ছবির মাঝামাঝি সময় তারা টিভি বন্ধ করে দেয়। প্রচণ্ড অপমানে বাসায় ফিরে আসি।তখন প্রতিজ্ঞা করি একদিন টিভি কিনে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিব। 

বাড়ীর পাশে শাহজাহান ভাইয়ের দোকান ছিল। সেখানে পড়া লেখা শেষ করে রাত ৮.৩০মিঃ উপস্থিত হতাম ধারাবাহিক নাটক দেখতে। তার শর্ত ছিল কিছু খেতে হবে। এক শুক্রবারে ছবি দেখতে গেলাম -সেখানে তার শর্ত ছিল -০৫টাকা করে দিতে হবে। আমার কাছে টাকা ছিলনা -দোকান থেকে মন খারাপ করে চলে আসি। আমার বড় ভাই তখন সে দোকানের ক্যাশে বসা  ছিল -সে এ ঘটনা জানতে পেরে আমারে ফেরত নিতে আসে। অপমানে আর যায়নি। প্রতিজ্ঞা করি একদিন সাধ্য হলে টিভি কিনে দেখবো। 

একবার পাশের গ্রাম (পালোয়ান বাড়ীতে) আমাদের বাড়ী থেকে ০১ কিলো মিটার দুরে যাই বাংলা ছবি দেখতে । যতদূর মনে পড়ে নায়ক আলমগীর আর ববিতার হারানো মানিক দেখলাম। সেদিন থেকে আমি আলমগীরের ভক্ত হয়ে যাই। নিয়তির লেখন  -সে আলমগীরের সাথে নাটকে কাজ করেছি সহ শিল্পী হিসাবে। 

ঢাকায় এসে প্রথমে সাদাকালো টিভি কিনি।  বাবা একদিন ঢাকায় এসে আমার বাসায় টিভি দেখে -দেশে নিয়ে যেতে চাইলো। দিয়ে দিলাম বাবাকে । এরপর বাবাকে রঙ্গিন টিভিও কিনে দিয়েছি। এখন আমাদের বাসায় টিভি নেই। বাবা চোখে দেখেনা বলে -এলাকার এক ভাইকে টিভিটা দিয়ে দিয়েছি। আত্মীয় স্বজন  এবং বন্ধু বান্ধবকে  এ পর্যন্ত প্রায় ৮/১০ টা টিভি কিনে দিয়েছি ।

আমার বাসায় ২৪ ইঞ্চির একটা  বক্স টিভি আছে।  এটাও দেখা হয়না তেমন । খেলা হলে একটু খুলে দেখি। মাঝে মাঝে ভাত বা নাস্তা খেতে একটু চালাই। প্রযু্ক্তির এ যুগে টিভি দেখে খুব কম লোকেই । কারন বেশির ভাগ খবর এখন ফেসবুকেই চলে আসে। তাছাড়া টিভিতে এত পরিমান এ্যাড দেয় যার কারনে টিভি দেখার আগ্রহ হারিয়ে গেছে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ